03 Sep
03Sep

গুয়াম প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমাংশে অবস্থিত একটি ছোট দ্বীপ। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অরক্ষিত অঞ্চল এবং পশ্চিমা ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় সংস্কৃতির একটি মিশ্রণ। গুয়ামের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য শতাব্দী প্রাচীন, যা এই দ্বীপকে একটি আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্যে পরিণত করেছে।

গুয়ামের ইতিহাস

গুয়ামের ইতিহাস প্রায় ৪০০০ বছর পূর্বে শুরু হয়, যখন চামোরো নামে পরিচিত মাইক্রোনেশিয়ান জনগোষ্ঠী এই দ্বীপে বসতি স্থাপন করে। চামোরোরা দ্বীপের প্রাচীন সভ্যতা গড়ে তোলে, এবং তাদের জীবিকা ছিল মূলত মাছ ধরা, কৃষি, এবং হাতে তৈরি কারুশিল্প। ১৫২১ সালে ফার্দিনান্দ ম্যাগেলানের নেতৃত্বে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের আগমনের পর গুয়ামের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। স্পেন দীর্ঘ প্রায় ৩০০ বছর দ্বীপটি শাসন করে, যার ফলে চামোরো সংস্কৃতিতে স্পেনীয় প্রভাব পড়ে। ১৮৯৮ সালে স্পেন-আমেরিকা যুদ্ধের পর গুয়াম যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হয়ে যায়।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, গুয়াম জাপানের দখলে ছিল। ১৯৪৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র গুয়াম পুনরায় দখল করে। এই যুদ্ধকালীন ইতিহাসের কারণে গুয়ামে প্রচুর যুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ এবং যাদুঘর রয়েছে। আজকের দিনে, গুয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি এবং পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য।

গুয়াম দর্শনীয় স্থান


দর্শনীয় স্থান

গুয়ামে দর্শনীয় স্থানগুলির অভাব নেই। কিছু উল্লেখযোগ্য স্থান হলো:

  1. তুমোন বে: গুয়ামের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র। এখানে আপনি সুন্দর সাদা বালির সৈকত এবং বিলাসবহুল হোটেল পাবেন। স্নরকেলিং, স্কুবা ডাইভিং এবং জেট স্কিইং এখানে খুব জনপ্রিয়।
  2. ওকো পোইন্ট: একটি উঁচু পাহাড়ি স্থান যা থেকে পুরো দ্বীপের মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। এটি সূর্যাস্ত দেখার জন্য অন্যতম সেরা স্থান।
  3. ফোর্ট সান্তা আগুয়েদা: স্পেনীয় উপনিবেশিক আমলের একটি পুরাতন দুর্গ। এটি ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান।
  4. চামোরো ভিলেজ: এটি গুয়ামের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যেখানে স্থানীয় কারুশিল্প, খাবার, এবং ঐতিহ্যবাহী নৃত্য দেখা যায়। প্রতি বুধবার সন্ধ্যায় এখানে একটি জনপ্রিয় নাইট মার্কেট বসে।
  5. এপান বিচ পার্ক: এই সৈকতটি তার হালকা নীল জল এবং সূক্ষ্ম সাদা বালির জন্য বিখ্যাত। এখানে পরিবারগুলির জন্য পিকনিক করার আদর্শ স্থান।

ভ্রমণ গাইড

গুয়াম ভ্রমণ পরিকল্পনা করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত। প্রথমত, গুয়ামে যাতায়াতের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক মাধ্যম হল গাড়ি ভাড়া। যেহেতু দ্বীপটি ছোট, তাই একদিনের মধ্যে প্রধান প্রধান স্থানগুলি ঘুরে দেখা সম্ভব। তুমোন বে এলাকায় প্রচুর হোটেল এবং রিসর্ট রয়েছে, যা বিভিন্ন বাজেটে উপলব্ধ।

গুয়ামের স্থানীয় খাবার চেখে দেখার মতো। বিশেষ করে চামোরো খাবারগুলি, যেমন 'কেলাগুয়েন', 'রেড রাইস' এবং 'ফিনাডেন্নি' চেখে দেখা উচিত।

গুয়ামের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হতে চামোরো ভিলেজ ও স্থানীয় জাদুঘরগুলি ভ্রমণ করা আবশ্যক। দ্বীপের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে যুদ্ধকালীন স্মৃতিস্তম্ভ এবং প্যাসিফিক ওয়ার মিউজিয়াম দেখা উচিত।

গুয়ামের আবহাওয়া গ্রীষ্মমণ্ডলীয়, তাই সারা বছরই এখানে ভ্রমণ করা যায়। তবে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শীতল এবং শুষ্ক মৌসুম ভ্রমণের জন্য আদর্শ।

Comments
* The email will not be published on the website.