পরিবেশ নীতির ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ভূমিকা আজকের বিশ্বে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্যের ক্ষয় এবং সম্পদের অপচয়ের মুখোমুখি হয়ে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, এবং এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় প্রযুক্তি শুধু টুল নয়, বরং একটি কৌশলগত অংশ। ২০২৫ সালে, OECD-এর Regulatory Policy Outlook অনুসারে, ভালো ডিজাইন করা এবং বাস্তবায়িত নিয়মাবলী গ্রিন ট্রানজিশন অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে ডিজিটাল প্রযুক্তি রিসোর্স কনজাম্পশন মনিটরিং, ওয়েস্ট রিডাকশন এবং সাসটেইনেবল প্র্যাকটিস ইন্টিগ্রেশনে সাহায্য করছে। এছাড়া, US White House-এর ২০২৫-এর এক্সিকিউটিভ অর্ডার "Updating Permitting Technology for the 21st Century" এনভায়রনমেন্টাল পারমিটিং প্রক্রিয়ায় আধুনিক টেকনোলজি ম্যাক্সিমাইজ করার নির্দেশ দিয়েছে, যা পেপার-বেসড সিস্টেম থেকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে রূপান্তর ঘটাচ্ছে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (WEF)-এর ২০২৫-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, টেকনোলজি প্র্যাকটিশনাররা কোড এফিশিয়েন্সি, রিনিউয়েবল-পাওয়ার্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং কমিউনিটি কোলাবরেশনের মাধ্যমে এনভায়রনমেন্টাল স্টুয়ার্ডশিপ ড্রাইভ করতে পারে। Greenly-এর বিশ্লেষণে ২০২৫-এর গ্রিন টেক ট্রেন্ডস যেমন লো-কার্বন কনস্ট্রাকশন এবং কার্বন ক্যাপচার পলিসি ইমপ্লিকেশন তৈরি করছে।
এই লেখায় আমরা এই ভূমিকা বিস্তারিত আলোচনা করব, উদাহরণসহ, যা নীতিনির্ধারক, গবেষক এবং সাধারণ পাঠকদের জন্য উপযোগী।
ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন পরিবেশ নীতিতে রিসোর্স মনিটরিং এবং কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করছে। OECD-এর ২০২৫ আউটলুক অনুসারে, ডিজিটাল টেকনোলজি সাসটেইনেবিলিটি স্ট্র্যাটেজিতে ইন্টিগ্রেট করে রিসোর্স কনজাম্পশনকে আরও কার্যকরভাবে ট্র্যাক করে, ওয়েস্ট রিডুস করে এবং এনভায়রনমেন্টাল পারফরম্যান্স উন্নত করে। উদাহরণস্বরূপ, AI এবং IoT-ভিত্তিক সেন্সর নেটওয়ার্ক রিয়েল-টাইম ডেটা প্রদান করে, যা নীতি বাস্তবায়নে সাহায্য করে। US-এর এক্সিকিউটিভ অর্ডারে CEQ (Council on Environmental Quality) কে Permitting Technology Action Plan তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা ডেটা স্ট্যান্ডার্ড, সফটওয়্যার ফাংশনালিটি এবং ইন্টারএজেন্সি ডেটা শেয়ারিং নিয়ে ফোকাস করে। এটি NEPA (National Environmental Policy Act) রিভিউ প্রক্রিয়ায় অটোমেশন এবং ডেটা-ড্রিভেন ডকুমেন্টেশন চালু করে টাইমলাইন কমাবে।
WEF-এর মতে, টেক প্র্যাকটিশনাররা কোড এফিশিয়েন্সির মাধ্যমে সাসটেইনেবল সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রমোট করতে পারে, যেমন মডুলারাইজেশন এবং অ্যালগরিদম অপটিমাইজেশন দিয়ে এনার্জি কনজাম্পশন কমানো। ডেটা সেন্টারগুলোর বিদ্যুৎ খরচ বিশ্বব্যাপী ২-৩% হয়েছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ১,০০০ টেরাওয়াট-আওয়ার ছাড়িয়ে যাবে। Green Software Foundation-এর স্ট্যান্ডার্ড এবং টুলকিট এই প্র্যাকটিসগুলোকে সাপোর্ট করে। এছাড়া, রিনিউয়েবল-পাওয়ার্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার যেমন ক্লাউড রিজিয়ন সিলেকশন এবং কার্বন-অ্যাওয়্যার শেডুলিং ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারের কার্বন এমিশন (যা অ্যাভিয়েশনের সমান) কমায়।
২০২৫ সালে গ্রিন টেকনোলজির পাঁচটি শীর্ষ ট্রেন্ড পরিবেশ নীতিকে রূপান্তরিত করছে।
প্রথমত, লো-কার্বন কনস্ট্রাকশন, যা বিল্ডিংয়ের লাইফসাইকেলে কার্বন এমিশন কমায়। এতে অ্যাডভান্সড ইনসুলেশন, LED লাইটিং, স্মার্ট HVAC এবং সোলার প্যানেল ইন্টিগ্রেশন অন্তর্ভুক্ত, যা ট্র্যাডিশনাল কনস্ট্রাকশনের ৩৭% গ্লোবাল GHG এমিশন কমাতে পারে। নীতিগতভাবে, ট্যাক্স ক্রেডিট এবং ম্যান্ডেটস এই টেককে প্রমোট করে, যেমন EU-এর গ্রিন ডিলে লো-কার্বন ম্যাটেরিয়ালসের ব্যবহার বাধ্যতামূলক।
দ্বিতীয়ত, কার্বন ক্যাপচার অ্যান্ড স্টোরেজ (CCS), যা অ্যাটমোস্ফিয়ার থেকে কার্বন ক্যাপচার করে সিন্থেটিক ফুয়েল তৈরি করে। এর খরচ ৬ গুণ কমলে স্কেলেবল হবে, যা ১.৫°সি লিমিট অতিক্রম রোধে সাহায্য করবে। পলিসিতে, ফান্ডিং এবং ইনসেনটিভস যেমন US-এর IRA (Inflation Reduction Act) এই টেককে বুস্ট করে।
তৃতীয়ত, রিনিউয়েবল এনার্জি স্টোরেজ, যা সোলার বা উইন্ডের ইন্টারমিটেন্সি সমাধান করে। কোম্পানি যেমন Aquion Energy এবং Highview Power লং-টার্ম স্টোরেজ প্রদান করে ফসিল ফুয়েল থেকে শিফট সহজ করে। নীতিতে, গ্রিড ইন্টিগ্রেশন ম্যান্ডেটস এবং সাবসিডি এটিকে সমর্থন করে।
চতুর্থ, হাইড্রোজেন টেক, যা ফুয়েল সেল ভেহিকেলে ব্যবহৃত হয় এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ৪০০ মিলিয়ন কার, ২০ মিলিয়ন বাস এবং ২০% প্যাসেঞ্জার শিপ পাওয়ার করতে পারে। এর খরচ কমিয়ে ট্রান্সপোর্ট এমিশন কাটবে। পলিসিতে, EU-এর হাইড্রোজেন স্ট্র্যাটেজি ইনভেস্টমেন্ট এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার বিল্ড করে। পঞ্চম, আপসাইক্লিং (সার্কুলার ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট), যা ওয়েস্টকে নতুন প্রোডাক্টে রূপান্তর করে ল্যান্ডফিল কমায়।
উদাহরণস্বরূপ, পুরনো জারকে প্ল্যান্টার বা টি-শার্টকে ক্লিনিং ক্লথে পরিণত করা। নীতিতে, জিরো-ওয়েস্ট প্রিন্সিপল এবং ESG রিপোর্টিং এটিকে প্রমোট করে, যা ESG লিডারদের ROI ১২.৯% বাড়ায়।
প্রযুক্তি রেগুলেশনকে আরও ইফেক্টিভ করে তুলছে। US-এর এক্সিকিউটিভ অর্ডারে Permitting Innovation Center তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা NEPA এবং অন্যান্য পারমিটের জন্য প্রোটোটাইপ টুল ডিজাইন এবং টেস্ট করবে, যেমন কেস ম্যানেজমেন্ট এবং ডেটা এক্সচেঞ্জ। এটি ইন্টারএজেন্সি গভর্ন্যান্স এবং ইমপ্লিমেন্টেশন টাইমলাইন নির্ধারণ করে ট্রান্সপারেন্সি বাড়াবে। WEF-এর লেভার ৩-এ কমিউনিটি কোলাবরেশন যেমন Green Software Foundation এবং Mozilla-এর Sustainability Programme ওপেন-সোর্সে এনভায়রনমেন্টাল মেট্রিক্স ইন্টিগ্রেট করে, যা ডেভেলপার মিটআপ এবং হ্যাকাথনের মাধ্যমে সাসটেইনেবিলিটি এডুকেশন প্রমোট করে।
Google-এর Sustainability প্রোগ্রাম ডেটা সেন্টার এনার্জি রিডাকশন, ক্লিন এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট এবং ওয়াটার রিপ্লেনিশমেন্ট করে, যা নীতিতে ESG মেট্রিক্স রিপোর্টিংকে সাপোর্ট করে। OECD-এর সাজেশন অনুসারে, রেগুলেটরি ডেলিভারি ইমপ্রুভ করে টেকনোলজি গ্রিন ট্রানজিশন অর্জনে সাহায্য করে, যেমন ডেটা-ড্রিভেন রুলস এবং ইন্টারঅপারেবল প্ল্যাটফর্ম।
প্রযুক্তির ভূমিকা সত্ত্বেও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ডিজিটাল ইকোনমির এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট যেমন ডেটা সেন্টারের ২% কার্বন এমিশন, যা WEF-এর মতে অ্যাভিয়েশনের সমান। AI-ফার্স্ট প্যারাডাইম এনার্জি-ইনটেনসিভ, তাই সিম্পলার রুল-বেসড সিস্টেম প্রায়োরিটাইজ করা দরকার। রেগুলেটরি অনিশ্চয়তা এবং ডিজিটাল ডিভাইডও বাধা। US অর্ডারে ডুপ্লিকেটিভ সাবমিশন এবং ডকুমেন্ট লেংথ কমানোর উপর ফোকাস করে এগুলো মিটিগেট করা হয়েছে। Greenly-এর মতে, CCS-এর উচ্চ খরচ এবং হাইড্রোজেনের ইনফ্রাস্ট্রাকচার চ্যালেঞ্জ, যা পলিসি ইনসেনটিভস দিয়ে সমাধানযোগ্য।
২০৩০ সালের মধ্যে, AI-এনহ্যান্সড রেগুলেশন এবং ওপেন-সোর্স কোলাবরেশন গ্রিন ট্রানজিশনকে ত্বরান্বিত করবে। OECD-এর রেকমেন্ডেশন অনুসারে, ইন্টারঅপারেবল ডেটা সিস্টেম এবং টেক-ড্রিভেন গভর্ন্যান্স নেট-জিরো লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে। WEF-এর মতো, টেক প্র্যাকটিশনারদের মেন্টরিং এবং হ্যাকাথন সাসটেইনেবিলিটি কালচার তৈরি করবে। Greenly-এর ট্রেন্ডস যেমন আপসাইক্লিং সার্কুলার ইকোনমিকে লিড করবে, যা ESG-ড্রিভেন পলিসিতে ইন্টিগ্রেট হবে।
পরিবেশ নীতিতে প্রযুক্তির ভূমিকা একটি বিপ্লবী পরিবর্তন ঘটাচ্ছে, যা ডিজিটাল টুলস থেকে গ্রিন ইনোভেশন পর্যন্ত বিস্তৃত। OECD, WEF এবং US-এর ২০২৫ উদ্যোগগুলো দেখায় যে, টেকনোলজি শুধু সমস্যা সমাধান করে না, বরং টেকসই ভবিষ্যত গড়ে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা এবং ইনভেস্টমেন্ট দরকার। আমরা সকলে এই যাত্রায় অংশ নিয়ে গ্রহকে রক্ষা করতে পারি।